Saturday, June 29, 2013

Malaria (ম্যালেরিয়া)

কিছু কথা


ম্যালেরিয়া একটি পরজীবী বাহিত রোগ। এটি প্লাজমোডিয়াম নামক একটি একক celled প্রটোজোয়া পরজীবী দ্বারা ঘটিত হয়। এই পরজীবী মশার মাধ্যমে মানুষের দেহে প্রবেশ করে। গ্রীষ্মমণ্ডলীও স্থানে বিশেষ করে শিশু ও গর্ভবতী মহিলাদের এই রোগ বেশী দেখা যায়। পৃথিবীতে প্রতি বছর প্রায় ৫০০ মিলিয়ন মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হয় এবং ১-২ মিলিয়ন মানুষ মারা যায়। বাংলাদেশের মধ্যে প্রধান যে কইটি রোগ আছে  ম্যালেরিয়া তার মধ্যে একটি। বাংলাদেশের ১৩ টি জেলাতে এই রোগ বেশী দেখা যায়। ৯৮%  ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের ঘটনা এইসব এলাকা থেকে পাওয়া গেছে। ১৩ টি জেলার মধ্যে আছে খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, বান্দরবন, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ময়মনসিংহ, নেত্রকনা, শেরপুর এবং কুড়িগ্রাম।


কীভাবে হয়?


স্ত্রী আনোফেলিস মশার কামড়ের দ্বারা  প্লাজমোডিয়াম পরজীবী মানুষের দেহে প্রবেশ করে। শুধু আনোফেলিস মশা ম্যালেরিয়া সংক্রমিত করতে পারে এবং তারা সংক্রমিত ব্যক্তির থেকে রক্ত খাওয়ার সময় সংক্রমিত হয়ে থাকে। যখন একটা সংক্রমিত মশা একজন সুস্থ ব্যক্তিকে কামড়ায়, তখন এটা ব্যক্তির শরীরের মধ্যে অতি ক্ষুদ্র, অপরিণত পরজীবী প্রেরণ করে।
এই অপরিনত পরজীবী রক্তপ্রবাহের মাধ্যমে লিভারে যায় এবং সেখানে বিকাশ এবং বংশ বৃদ্ধি করে। এই বিকশিত পরজীবী পুনয়ায় রক্তপ্রবাহে প্রবেশ করে এবং লোহিত রক্তকনিকাকে (RED BLOOD CELL) আক্রমন করে।  এর মধ্যে কিছু কিছু পরজীবী সেক্সুয়াল স্টেজে পৌছায়। এই সময় কোন  স্ত্রী আনোফেলিস মশা যদি এই রক্ত পান করে তবে তারা পুনয়ায় নতুন ভাবে বংশবিস্তার করতে পারে। লোহিত রক্তকনিকা তে থাকা অবস্থায় এই পরজীবী অবিরত বংশবিস্তার করতে থাকে এবং ৪৮-৭২ ঘণ্টার মধ্যে এই কনিকা ভেঙ্গে রক্তপ্রবাহে প্রবেশ করে। এই সময় ওই আক্রান্ত ব্যক্তি মাথা ব্যাথা অনুভব করে এবং মাঝে মাঝে জ্বর আসতে শুরু করে। প্রতি ৪৮-৭২ ঘণ্টায় পরজীবীর এই জীবনচক্র চলতে থাকে। ফলে লোহিত রক্তকনিকা এর অভাব দেখা দেয়, এবং ব্রেইন ও অন্যান্য অঙ্গে অক্সিজেন এর ঘাটতি দেখা দেয়।


লক্ষন সমূহ


প্রাথমিক ভাবে ম্যালেরিয়া সুপ্তাবস্থায় থাকার কিছু দিন পরে লক্ষন প্রকাশ করতে পারে।

- প্লাজমোডিয়াম ফ্যালসিপেরাম এর ক্ষেত্রে ৯-১৪ দিন
- প্লাজমোডিয়াম ভাইভ্যাক্স ও  প্লাজমোডিয়াম ওভালি এর ক্ষেত্রে ১২-১৪ দিন
- প্লাজমোডিয়াম ম্যালেরে এর ক্ষেত্রে ১৮-৪০ দিন
- প্লাজমোডিয়াম নলেসী এর ক্ষেত্রে ১১-১২ দিন।

লক্ষন ৭ দিনের মধ্যে ও দেখা দিতে পারে। কখনো কখনো  প্লাজমোডিয়াম ভাইভ্যাক্স ও  প্লাজমোডিয়াম ওভালি এর ক্ষেত্রে এক্সপোজার এবং অসুস্থতার লক্ষণ ৮ থেকে ১০ মাস পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।

ম্যালেরিয়ার সাধারণ লক্ষণগুলো হল,

- জ্বর
- শরীর ঠান্ডা হয়ে যাওয়া
- মাথা ব্যাথা
- ঘাম
- ক্লান্তি
- বমি বমি ভাব ও বমি

ম্যালেরিয়ার অন্য সাধারণ লক্ষণগুলো

- শুকনো কাশি
- পেশী অথবা ব্যাক পেইন
- স্প্লীন বড় হয়ে যাওয়া
- ডাইরিয়া
- কিছু ক্ষেত্রে, এটা মস্তিষ্কে বা কিডনিকে প্রভাবিত করতে পারে।


প্রতিকার


- ম্যালেরিয়া  দ্বারা কীভাবে আক্রান্ত হয় তা জানতে হবে এবং সচেতন থাকতে হবে।
- প্রতিরক্ষামূলক পোশাক পরিধান (দীর্ঘ প্যান্ট এবং দীর্ঘ কাটা শার্ট)
- বেড জাল (মশার জাল) ব্যবহার করতে হবে।
- গৃহমধ্যে মশা নাশক স্প্রে ব্যবহার করতে হবে।
- উচ্চ ঝুঁকি পূর্ণ এলাকা এড়িয়ে চলুন।
- বাহক নিয়ন্ত্রণ।
- ওপরের যে কোন লক্ষন দেখা দিলে ডাক্তার এর পরামর্শ নিতে হবে।



No comments:

Post a Comment